জানা যায়, গত বছরের ২৩ মার্চ চিলমারীর রমনা থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে এখনও বন্ধ রয়েছে এই রুটের ট্রেন চলাচল। চিলমারী-পার্বতীপুর পথে কবে নাগাদ নিয়মিতভাবে পুনরায় ট্রেন চালু করা হবে সে বিষয়েও কিছু বলতে পারছেন না রেলওয়ের কর্মকর্তারা।
এদিকে ট্রেন না থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন রেল নির্ভরশীল হাজার হাজার যাত্রী। কর্তৃপক্ষের নজরের অভাব এবং নানা অজুহাতে বন্ধ রয়েছে চিলমারী-পার্বতীপুর রেলপথে চলা ট্রেনটি। এর ফলে স্বল্প ভাড়ায় সহজে যাতায়াত করার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় যাত্রীরা।
আরও পড়ুন: পটিয়া-দোহাজারি রেলপথের নব দিগন্তের দ্বার উন্মোচিত হলো: মন্ত্রী
চিলমারী নদী বন্দর ও হরিপুর তিস্তা সেতু কাজের অগ্রগতি হলেও, চিলমারী-পার্বতীপুর রুটের ট্রেনটি বন্ধ থাকায় জনসাধারণের মাঝে বাড়ছে হতাশা।
এ রুটের ট্রেনটি বন্ধ থাকার ফলে রেলপথে যাতায়াতকারী জেলার চিলমারী, উলিপুর রৌমারী, রাজিবপুরসহ বিভিন্ন এলাকার মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এছাড়া ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন এ অঞ্চলের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা, বেকার হয়েছেন অনেকেই। কাজ হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন কুলি, শ্রমিক ও তাদের পরিবার।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় ২ শতাধিক অনুমোদনহীন রেলক্রসিং যেন ‘মরণ ফাঁদ’
মাইদুল, ছাইফুল, গওছল হক, ফিরোজসহ চিলমারী বন্দরের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, আগে তারা কম খরচে বিভিন্ন মালামাল ট্রেনে পরিবহন করতে পারতেন। কিন্তু এখন বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান ও সিএনজি দিয়ে বেশি টাকা ব্যয় করে মালামাল পরিবহন করতে হচ্ছে।
এদিকে প্রায় এক বছর বন্ধ পড়ে থাকায় স্টেশনের বিভিন্ন মালামালসহ অফিসের বিভিন্ন যন্ত্রাংশও নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের মধ্যে খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন নির্মাণ কাজ শেষ করার নির্দেশ
রেল, নৌ ও যোগাযোগ কেন্দ্রীয় গণকমিটির সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান নলেজ জানান, ১৯৬৫ সালে চিলমারী থেকে রেলপথ চালু হয়। তিস্তা থেকে কুড়িগ্রাম হয়ে চিলমারীর রমনা স্টেশন পর্যন্ত ৮টি রেলপথ স্থাপন করা হয়।
‘কিন্তু কর্তৃপক্ষের গাফলতি, নজরদারী ও দুর্নীতির কারণে ধীরে ধীরে জৌলুশ হারিয়ে তা অচল হয়ে পড়েছে এবং এর ফলে জনদুর্ভোগও বাড়ছে,’ বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ট্রেনে নারীদের জন্য আলাদা কামরা বরাদ্দ চেয়ে রিট
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেল সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, ‘কিছুদিন আগে রেল চেয়ারম্যান পরিদর্শনে আসলেও, কৌশলে তাকে চিলমারী আসতে দেয়া হয়নি এবং চিলমারীতে দায়িত্বে থাকা বুকিং সহকারী ও পোর্ডারদেরও সরিয়ে নেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘মহামারি করোনাভাইরাস, প্রয়োজনীয় সংখ্যক চালক, ইঞ্জিন স্বল্পতা এবং স্টেশন মাস্টার না থাকার কারণে ট্রেনটি বন্ধ রয়েছে।’
আরও পড়ুন: চলন্ত ট্রেন থেকে টিকিটের টাকা গায়েব: ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন